দীর্ঘদিন এক সঙ্গে ব্যবসা করে আসছিল আলমগীর হোসেন ও মেহেদি হাসান রুবেল। সেই সুবাধে আলমগীরের কাছ থেকে রুবেল ছয় লাখ টাকা ধার নেন। ধারের টাকা আনতে আলমগীর ছুটে যান রুবেলের কাছে।
তিন লাখ টাকা দিয়ে বাকি টাকা দেয়ার কথা বলে রুবেল একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আলমগীরকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরাঘুরি করে। তাদের সঙ্গে ফয়েজ নামে এক ভাড়াটে খুনিও ছিল। আর অটোরিকশার পেছনের সিটে রুবেল ও ফয়েজের মাঝখানে বসা ছিল আলমগীর।
পরে দালালবাজার-রামগঞ্জ সড়কের মীরগঞ্জ এলাকায় চলন্ত অটোরিকশায় রুবেল হাত-পা চেপে ধরলে আলমগীরকে জবাই করে ফয়েজ। একপর্যায়ে আলমগীরের মরদেহ কাজিরদিঘীর পাড় এলাকার একটি পুকুরে ফেলে দিয়ে চলে যায় তারা। এ সময় তিন লাখ টাকার মধ্যে ৫০ হাজার টাকা পেশাদার কিলার ফয়েজকে দেয়া হয়। বাকি আড়াই লাখ টাকা রুবেল নিয়ে যান। মূলত টাকা আত্মসাৎ করতেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ঘাতক রুবেলের আদালতে দেয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে শুক্রবার দুপুরে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মোক্তার হোসেন বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর হত্যার পরিকল্পনাকারী রুবেল ও অটোরিকশা চালক সাগরকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল কাদের তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে আগামীকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১০টায় রায়পুর শহরের প্রধান সড়কে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে।
জানা গেছে, ঘাতক রুবেল সদর উপজেলার পশ্চিমবটতলী এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ও সাগর দক্ষিণ মান্দারীর জামাল উদ্দিনের ছেলে। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সিএনজি ও আত্মসাৎ করা আড়াই লাখ টাকা উদ্ধার করেছে ডিবি।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে পাওনা টাকা আনতে আলমগীর হোসেন (৪৫) সদর উপজেলার মান্দারীতে রুবেলের কাছে যায়। বুধবার (২১ আগস্ট) সকালে সদর উপজেলার কাজিরদিঘীর পাড় এলাকার একটি পুকুর থেকে আলমগীর হোসেনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত আলমগীরের ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত আলমগীর হোসেন রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের সাইছা গ্রামের মৃত বশির উল্যার ছেলে। তিনি রায়পুর পৌরসভার এলাকার তানহা কম্পিউটার দোকানের স্বত্বাধিকারী।
0Share