রায়পুর: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভায় বসবাসকারী প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চরম পনি সংকটে ভুগছে। পানির অভাবে নিত্যদিনের জরুরী কাজ করতে পারছেন না পৌরসভার অধিবাসীরা।
জানা যায়, গত ২ মাস ধরে পৌরসভার সর্বত্রই বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট চলছে। বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের কারণে উচ্চ জলাধারে পাম্প দিয়ে পানি উত্তোলন করতে না পারায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে পৌরসভায় বসবাসকারী পরিবারগুলোকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এছাড়া শহরের হোটেল-রেস্তোরায় লোকজন বাধ্য হয়ে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছেন। অনেক পরিবার বোতলজাত পানি কিনে চাহিদা মেটাচ্ছেন মাস খানেক ধরে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ক্ষুদ্ধ পৌরবাসী আন্দোলনে রাস্তায় নামতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রায়পুর পৌর এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের প্রতিদিন ১৫ লাখ লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। পাম্প দিয়ে উচ্চ জলাধারে এ পানি উত্তোলন করতে হলে দৈনিক ১৬-১৭ ঘণ্টা বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু রায়পুর উপজেলায় দৈনিক বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ৭-৮ ঘণ্টা। তাও আবার ভোল্টেজ থাকে কম। এতে উচ্চ জলাধারে মাত্র ৪/৫ লাখ লিটার পানি উত্তোলন করা সম্ভব হয়। গত এপ্রিল মাস থেকে লোডশেডিং এর পরিমান বাড়তে থাকলে উচ্চ জলাধারের ট্যাংকিতে পানি উত্তোলন সম্ভব হচ্ছেনা। এতে শহরে পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর প্রেক্ষিতে পৌর কর্তৃপক্ষ জেনারেটর কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি দেওয়ার পর অনুমোদন না মেলায় সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন করতে পারছে না পৌর কর্তৃপক্ষ।
শহরের নতুন বাজার এলাকার ফ্রেন্ডস পোল্ট্রি খামারের স্বত্ত্বাধিকারী শাহজাহান মাসুদ বলেন, ‘পানি সংকটের কারণে আমার পোল্ট্রি খামার বন্ধের উপক্রম হয়েছে। প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে টিউবওয়েল থেকে খামারের জন্য পানি আনতে হয়।’
পানি সংকট নিয়ে আশার বাণী নেই রায়পুর পৌরসভার মেয়র এ বি এম জিলানীর মুখে। তিনি অবশ্য পৌরবাসীর দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে চাহিদামত পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবগত করেও কোনো সুফল আসেনি। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন না পাওয়ায় পৌর সভায় জেনারেটরও কেনা যাচ্ছে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানাজার (ডিজিএম) মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘লোডশেডিং একটি জাতীয় সমস্যা। এছাড়া নোয়াখালী গ্রীড থেকে চাহিদামত বিদ্যুৎ সরবরাহ না করায় রায়পুরে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৮/৯ মেগাওয়াট, কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ২/৩ মেগাওয়াট।’
0Share