রায়পুর প্রতিনিধি: মোখলেছুর রহমান (৫৫)। তিনি রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি। আবার রামগতি উপজেলার ৫নং চর আব্দুল্লার ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী। মাসে ১ বার অফিস করে প্রতিদিনের উপস্থিতি দেখিয়ে মাসিক বেতন তুলে নিয়ে আসেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ । আ.লীগ নেতা হাওয়ায় এ নিয়মে ১৪ বছর পার হয়ে আসলেও তাকে কোন স্থানে বদলি ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগও করতে পারছেন না কেউ। নেতার এ ঘটনায় একদিকে যেমন সেবা থেকে বঞ্চিত ওই চারাঞ্চলের অভাবি মানুষ তেমনি ক্ষুদ্ধ ও অতিষ্ট তার সহকর্মীরা।
সোমবার সরজমিনে ওই নেতার কর্মস্থল চর আবদুল্লায় গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চরাঞ্চলবাসী ও তার সহকর্মীরা এ অভিযোগ করেন। মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে তার সহকর্মীরা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর আগে মোখলেছুর রহমান রামগঞ্জ উপজেলা থেকে বদলি হয়ে রামগতি উপজেলার ৫নং চর আব্দুল্লার ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর কয়েক মাস নিয়মিত অফিস করে। পরে আ.লীগ নেতার পরিচয় দিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বাড়ীতে বসে কর্মস্থলে উপস্থিত না হয়ে কাগজ কলমে অফিস করেন নিয়মিত। পরে মাসে এক দিন অফিসে গিয়ে পুরো মাসের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে প্রতি মাসের বেতন তুলে নিয়ে আসেন ১৫ হাজার টাকা। এতে তার দ্বারা বছরের পর বছর সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চরাঞ্চলবাসী। অন্যদিকে কর্মস্থলে তার উপস্থিতি না থাকায় সহকর্মীরা রয়েছেন চরম ক্ষুদ্ধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেরোয়া ইউনিয়নের কয়েকজন আ.লীগ নেতা বলেন, তিনি কেরোয়া ইউনিয়নের আ.লীগের সভাপতি। সারাক্ষণ রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। গত ২৬ জুন বৃক্ষ মেলা উদ্ধোধন উপলক্ষে রায়পুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় তিনি জেলা প্রশাসকের সামনে আ.লীগ সভাপতি পরিচয় দিয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি কখনও স্বাস্থ্য সহকারীর পরিচয়ও দিতে চান না।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোখলেছুর রহমান উত্তেজিত হয়ে বলেন, এসব বিষয় খোজ নিতে আপনি কেন আমার কর্মস্থলে গেলেন এবং কে যেতে বলল? আপনি এখনি উপজেলা আ.লীগের কার্যালয়ে আসেন। এ সংক্রান্ত কোন রির্পোট প্রকাশ করবেন না।
রামগতি উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মামুন অর রশিদ বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী মোখলেছুর রহমান কর্মস্থলে না গিয়ে বেতন উত্তোলন ও আ.লীগের সভাপতি বিষয়টি তার জানা নেই। চাকুরী বিধি অনুসারে কোন সরকারী কর্মকর্তা সরাসরি এভাবে কোন রাজনীতির সাথে জড়িত থাকতে পারে না। খোঁজখবর নিয়ে শ্রীঘই তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0Share