তাবারক হোসেন আজাদ: সোনালী ব্যাংক রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জ শাখায় ৮ মিলিয়ন (৮০ লক্ষ) টাকা আত্মসাতের চেষ্টার ঘটনায় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পর উপজেলা থেকে জেলা ব্যাপী তোলপাড় চলছে। যা দুলাল হোসেন রাজু নামের এক ব্যবসায়ীর হিসাবে ৮ লক্ষ টাকার সিসি ঋণের আবেদনে রহস্যজনকভাবে ৮০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর দেখানো হয়। এ সুযোগে ওই ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে ৯ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়েও যান।
ব্যাংক সংশ্লিস্ট ও বাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ী অভিযোগ ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে জানা যায়, হায়দরগঞ্জ উত্তর বাজারের রড ও টিন ব্যবসায়ী মো. দুলাল হোসেন রাজু তাঁর মেসার্স জাহানারা এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে সোনালী ব্যাংকের হায়দরগঞ্জ শাখায় সিসি ঋণ হিসাব পরিচালনা করছেন। সম্প্রতি হিসাব টি নবায়নের সময় তিনি ৮ লক্ষ টাকার জন্য আবেদন ও প্রক্রিয়াগত কাজ সম্পন্ন করেন। রহস্যজনক কারণে ওই হিসাবে ৮ মিলিয়ন বা ৮০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর দেখানো হয়। এরপর ব্যবসায়ী দুলাল সেই মঞ্জুরীর সিসি হিসাব থেকে ইতোমধ্যে ৯ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যান।
মঙ্গলবার সকালে এবং বুধবার দুপুরে বাজারের ব্যবসায়ী ও ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, ব্যাংকটির সাবেক ম্যানেজার মহিউদ্দিন বাহার ও ব্যবসায়ী দুলাল হোসেন রাজু এ টাকা আত্মসাতের জন্য পরিকল্পিতভাবে ৮ লক্ষ টাকার ঋণের বিপরীতে ৮০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর দেখান। ঘটনা জানার পরও বর্তমান ম্যানেজার মো. মোস্তফা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বিষয়টি চেপে যান। সম্প্রতি ব্যাংকের উর্ধ্বত্বন কর্মকর্তারা ব্যাংক পরিদর্শনে এলে বিষয়টি নজরে পড়লে ঘটনার প্রকাশ পায়। বদলী করে দেয়া হয় ম্যানেজার বাহারকে।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী মো. দুলাল হোসেন রাজু বলেন, আমি ৮ লক্ষ টাকার ঋণের আবেদন করেছি। আমার হিসাবে ৮ মিলিয়ন টাকা থাকায় আমার চেকটি পাশ করা হয়েছে। আমি সেখান থেকে ৯ লক্ষ ৯ ৪হাজার টাকা উত্তোলন করেছি। আবেদনের অতিরিক্ত টাকা নেয়ার প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, শুধু আমি নই, আরো অনেকের হিসাবের ক্ষেত্রেও এ রকম হচ্ছে। আমরা কোনো হিসাব রাখিনা, ব্যাংকের মাধ্যমেই হিসাব হচ্ছে।
এদিকে আরেক সিসি ঋণ গ্রহীতা হুমায়ুনক কবির হাওলাদার ম্যানেজারের সম্মুখেই সাংবাদিকদের জানান, তাঁর সিসি হিসাব থেকে ব্যাংক অতিরিক্ত ৮৭ হাজার টাকা অতিরিক্ত কেটে নেয়। তিনি যদি অক্ষরজ্ঞান শূণ্য হতেন তবে এ হিসাব না বুঝতে পারায় তাকে এ টাকার ক্ষতি গুনতে হতো। ম্যানেজার মো. মোস্তফা অবশ্য স্বীকার করেন ভুলবশত: তাঁর হিসাবটি থেকে অতিরিক্ত সুদ কেটে নেয়া হয়েছে। ২/১ দিনের মধ্যেই তা ফেরত দিয়ে সংশোধণ করা হবে।
তবে ব্যাংকের ম্যানেজার মো. মোস্তফা বলেন, আমার আগের কর্মকর্তা মহিউদ্দিন বাহারের সময়ে এ ঋণ করানো হয়েছে। হিসাবের লেজারে ৮০ লক্ষ টাকা লেখা থাকায় ভুলবশত: ৮ লক্ষ টাকার ঋণ হিসাবের বিপরীতে ৯ লক্ষ ৯৪হাজার টাকা চলে যায়। অসাবধনতার কারণেই ৮ লক্ষ টাকার স্থলে ৮০ লক্ষ টাকা ঋণ মঞ্জুর দেখানো হয়েছে। ভুল সংশোধনের চেষ্টা চলছে।
0Share