রায়পুর প্রতিনিধি: রায়পুরে মারজাহান বেগম নামে একজনের দুই স্বামী, এক শিশুসন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে সাধারণ মানুষ ও দুই পরিবারের মধ্যে চলছে টানাটানি।সাড়ে চার মাসের শিশু আল আমিনের পিতৃত্বের দাবি করেন তার দ্বিতীয় স্বামী জয়নাল আবেদিন।
প্রথম স্বামী আজাদ হোসেন ৬ মাস আগে বিদেশ থেকে ছুটিতে বাড়িতে আসেন। গত ২০ দিন আগে ছুটি শেষ করে পুনরায় বাহরাইনে কর্মস্থলে চলে যান। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার ও বাচ্চার ডিএনএ পরীক্ষা করে পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করার দাবি করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী, জয়নাল আবেদিন ও তার পরিবার।
রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়নের সাগরী গ্রামের রফিক উল্যার ছেলে মারজাহান বেগমের স্বামী জয়নাল আবেদিন শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, স্ত্রী মারজাহান বেগম ও সন্তান আল আমিন ছাড়া আমি বাঁচব না। আমি আমার স্ত্রী ও সন্তানকে চাই। তিনি আরও জানান, ২০১১ সাল থেকে মারজাহান বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রথমে যোগাযোগ, তারপর প্রেম, ভালোবাসা ও অতঃপর তার সঙ্গে বিয়ে।
২০১২ সালের ৫ মে তিন লাখ টাকা দেনমোহরে কাবিননামা রেজিস্ট্রি হয়। পরে ১০ মে লক্ষ্মীপুর নোটারি পাবলিক এফিডেভিটের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী বিয়ে হয়। মারজাহান বেগম আমার রায়পুরে সাগরী গ্রামের বাড়িতে বসবাস করে আসছে। সাড়ে ৪ মাস আগে আমাদের সংসারে একটি ছেলে জন্ম নেয়। তার নাম রাখা হয়েছে আল আমিন। সম্প্রতি আমার স্ত্রী মারজাহান বেগম ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়।
পরে স্ত্রী-সন্তানকে দেখতে শ্বশুরবাড়িতে গেলে খাওয়া-দাওয়া শেষে তাদের সঙ্গে নিয়ে ফিরতে চাইলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও স্ত্রী মারজাহান বেগম পরদিন যাবে বলে আমাকে জানায়। এতে আমি বাড়িতে ফিরে আসি।
গত ৯ অক্টোবর নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানায় আমার স্ত্রী মারজাহান বেগম চাঁদাবাজি ও প্রতারণার একটি মামলা করে আমার বিরুদ্ধে। এরপর জানতে পারি আমার মারজাহান বেগমের এর আগেও একটি বিয়ে হয়েছে। ওই স্বামী আজাদ হোসেন বিদেশ থেকে দেশে এসে আমার স্ত্রী মারজাহান বেগমের সঙ্গে ঘর-সংসার শুরু করেছেন। বর্তমানে মারজাহান বেগম স্বামী হিসেবে তাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না ও ছেলে আল আমিনকে দেখতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
নিকাহনামা সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের চরকাঁকড়া গ্রামের অলি আহমেদের ছেলে আজাদ হোসেনের সঙ্গে ২০০৯ সালের ২৩ নভেম্বর মারজাহান বেগমের তিন লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়। এরপর আজাদ চলে যান বাহরাইনে। এ সময় স্বামীর অনুপস্থিতিতে বিয়ের তথ্য গোপন রেখে মারজাহান লক্ষ্মীপুরের জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে গড়ে তোলেন প্রেমের সম্পর্ক। একপর্যায়ে উভয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০১২ সালের ৯ মে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার সাগরদী গ্রামের রফিক উল্যার ছেলে জয়নাল আবেদিনের সঙ্গে তিন লাখ টাকা দেনমোহরে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের চরকাঁকড়া গ্রামের ওবায়েদুল হকের মেয়ে মারজাহান বেগমের বিয়ে হয়। লক্ষ্মীপুর নিকাহ অফিসের কাজী মাওলানা সালেহ আুুহমদ এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নিকাহ অফিসের কাজী হাফেজ আহমদ তাদের নিকাহ দুটি সম্পন্ন করেন।
এ ঘটনায় মারজাহান বেগম কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে তার মামা আবদুল হাই জানান, বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে সমাধান হবে।
0Share