রায়পুর প্রতিনিধি: রায়পুর উপজেলার বিভিন্নস্থানসহ নদী ও খালে অবস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো’র) জায়গাগুলো দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। অভিযোগ রয়েছে পাউবো’র কর্মকর্তাদের জোগসাজে স্থানীয় রাজনৈতিক
দলের নেতা ও প্রভাবসালীরা এ জায়গাগুলো দকল করছেন। এতে এক বছরে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বেদখল হয়ে গেছে। এ দখল উচ্ছেদে স্থানীয়রা অভিযোগ দিলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এতে পাউবো’র জায়গাগুলো এখন প্রভাবশালীরা নিজেদের সম্পদ করে পাকা ভবনসহ ইমারত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
শনিবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রায়পুর-বাংলাবাজার সড়কের পৌর সভার কাঞ্চনপুর গ্রামের ঘোষবাড়ীর সামনে পাউবো’র কোটি টাকার জায়গা দখল করে প্রাচির নির্মান করছেন রায়পুর ফিস হ্যাচারীর কর্মচারী ঝন্টু ঘোষ।
ঘটনাটি পাউবো’র কর্মকর্তাদের জানালেও শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। গত ২০ অক্টোবর রাতে রায়পুর-খাসেরহাট সড়কের চরবংশী ইউনিয়নের স্টিল ব্রিজ বাজার এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের খালের কোটি টাকা মূল্যের জায়গায় দখল করে স্থানীয় সেলিম কবিরাজ প্রায় ৪০টি পাকা ভবন নির্মাণ করেন। পরে স্থানীয় লোকদের কাছে কয়েকটি দোকান ভাড়া ও কয়েকটি বিক্রয় করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
গত এক বছর ধরে রায়পুর-পানপাড়া সড়কের লেংড়া বাজার স্থান সড়কে উভয় পাশের পাউবো’র খাল দখল করে প্রায় ১০টি দোকান নির্মান করেন স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা।
১নং উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের বেড়ি বাধের উপর দিয়ে চরভৈরবি সড়কের কাঠের পুল নামকস্থানে এক ইউপি সদস্য ও আ.লীগ নেতাসহ কয়েকজন প্রভাবশালী পাকা ভবন ও দলীয় কার্যালয় নির্মান করে ব্যবসা করে আসছেন।
২ নং উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চমকা বাজার ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে পাউবো’র খালের দুই পাশ দখল করে বেশ কয়েকটি দোকান নির্মান করেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী। এভাবেই একের পরে এক উপজেলার পাউবো’র জায়গাগুলো দখল হয়ে চলছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জানান, পাউবোর সম্পদ মানেই জনগনের সম্পদ। পাউবোর সম্পত্তিগুলো একের পর এক দখল হলেও কর্মকর্তা মোটা অংকের টাকা খেয়ে না দেখার ভান করে চুপ থাকেন। স্থানীয়রা এসব কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে মিথ্যে মামলাসহ নানা হয়রানীর স্বীকার হতে হয়। এতে তারাও এখন প্রতিবাদ করা ছেড়ে দিয়েছেন।
যোগাযোগ করা হলে চরবংশীর সেলিম কবিরাজ বলেন, এ জায়গাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাকে বলেই এ জায়গা দখল করা হয়েছে। কাঞ্চনপুর গ্রামের ঝণ্টু ঘোষ বলেন, পাউবো’র কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে প্রাচীর নির্মান করা হচ্ছে। আপনারা (সাংবাদিক) চাইলে তা ভেঙ্গে দেব। রির্পোট লেখার দরকার নাই।
পাউবো’র রায়পুর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসও মো: ইদ্রিস মিয়া বলেন, চরবংশী এলাকায় পাউবো’র জায়গায় ভবন নির্মাণের খবর পেয়েই কাজ বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কাঞ্চনপুরের বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
চাঁদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রফিক উল্যা বলেন, দখলের কয়েকটি ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। তার পরেও বেদখল হওয়া জায়গাগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছি। দখলের সাথে কোন কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0Share