রামগঞ্জ: রামগঞ্জ উপজেলায় প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য ৩১ শয্যাবিশিষ্ট একটি সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। চিকিৎসা সংকট, দালালদের প্রতারণা, কর্ত্যব্যরত ডাক্তারদের ভিজিট আদায় এবং নিয়মিত ডাক্তার না থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা দরিদ্র রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ডাক্তার সংকট না থাকলে ও ডাক্তাররা নিয়মিত হাসপাতালে না থেকে বেসরকারি ক্লিনিকে রোগী দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, ডাক্তাররা অফিস টাইমে হাজিরা খাতায় সই দিয়ে বাইরে অন-কলে রোগী দেখতে চলে যান।
তারা বলেন, হাসপাতালে যখন রোগী দেখেন তখন সরকারি রোগিদের কাছ থেকে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত ভিজিট আদায় করে প্রাইভেট ক্লিনিকের প্যাডে ব্যবস্থাপত্র দেন।
রোগীরা চেম্বার থেকে বাহির হলে দালালরা প্যাডের ওই ঠিকানায় পরিক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যেতে বলেন। গরিব রোগীরা টাকা দিতে না পারলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সরকারিভাবে হাসপাতালের রুগিদের জন্য ওষুদের সরবরাহ থাকলেও রোগীদের তেমন কোনো ওষুধ সরবরাহ করা হয় না। এছাড়াও হাসপাতালে থাকা রোগীদের সরবরাহ করা হয় অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের পড়তে হয় মহাবিপাকে। রোগীদের ৩১ বেড সিটের মধ্যে ১১টি তিন বছর থেকে নষ্ট, একমাত্র এক্সরে মেশিন ও অ্যাম্বুলেন্সটি বিগত সাড়ে তিন বছর থেকে নষ্ট হলেও টেকনিশিয়ান এবং ড্রাইভার ডিউটি না করেই বেতন নিচ্ছেন। রুমের ১২ টি ফ্যানের মধ্যে চার বছর থেকে ছয়টি ফ্যানই নষ্ট, অপরিষ্কার হাসপাতাল ময়লা আর্বজনায় ভরা, প্রতিটি টয়লেট ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
৩ নং ভাদুর ইউনিয়নের সমেষপুর গ্রামের নাছিমা রহমত জানান, গাইনি সমস্যায় ডা. নাজমুল সাহেবের কাছে গেলে উনি একশত টাকা না দিলে চিকিৎসা দিতে অপারগতা জানালে টাকা দিয়েই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছি।
পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বায়োপ্যাথ ক্লিনিকে যেতে বললেও টাকার অভাবে তা পারি নাই।
এছাড়াও বর্তমান ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটির দৈন্যদশা থাকার কারণে গত তিন বছর পূর্বে নির্মিত হওয়া ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি অদৃশ্য কারণে চালু না হওয়ায় অত্র উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী এলাকার লোকজনরা চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মোজাম্মেল হক জানান, রোগীদের কাছ থেকে ভিজিট নেয়া যাবে না। সরকারি হাসপাতালের বাইরে গিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখা যাবে না-এ জন্য শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। কথা না শুনলে আমি কী করবো।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশেপাশে প্রায় ২১টি বেসরকারি ক্লিনিক আছে। যার অধিকাংশগুলোতে ডাক্তার না থাকায় অন কলে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররাই রোগী দেখেন।
0Share